যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তাজুল ইসলাম। ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনে (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন।
যোগদানের পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় ‘আয় বৃদ্ধি, ব্যয় সংকোচন ও যাত্রীসেবার মান উন্নয়ন’ এই ব্রত নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। তারই হাত ধরে একসময়ের জরাজীর্ণ ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বিআরটিসি আজ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে আলোকিত হয়েছে চারিদিক।
যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন ও পণ্য পরিবহন সেবায় ‘জনগণের অন্তরে স্থান পেয়েছে বিআরটিসি’। বছরের পর বছর লোকেসানে থাকা এই প্রতিষ্ঠানটি লোকসান কমিয়ে বর্তমানে লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। সুনামের এ ধারা অব্যাহত রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব)।
যিনি এখানে যোগদানের পর অনেকাংশে পাল্টে গেছে রাষ্ট্রায়ত্ত এই সংস্থাটির চিত্র। দক্ষ তত্বাবধায়নের ফলে বর্তমানে বেতন, বিভিন্ন ভাতা, প্রতেঙ্গায় পর্যটক বাস, দেশের ২০ স্থানে কারিগরি প্রশিক্ষণসহ দেশের ৬৩ জেলায় নিরবচ্ছিন্ন যাত্রী সেবা দিচ্ছে বিআরটিসি।
বিআরটিসি তার জনকল্যাণকর কাজের জন্য বিভিন্ন মহলে প্রশসিংত হয়েছে। যার স্বীকৃতিস্বরুপ ২০২১-২২ অর্থবছরে এপিও বাস্তবায়নে ১ম স্থান, মন্ত্রণালয়ের অধিনস্ত প্রতিষ্ঠান প্রধানদের শুদ্ধাচার পুরস্কার অর্জন করেছে। সরকারি বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের মতো লোকসানে ধুঁকতে থাকা সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
হাজার কোটি টাকা ঋণের ভারে ন্যুব্জ প্রতিষ্ঠানটি এখন লাভের মুখ দেখেছে। ধারাবাহিক মুনাফা করছে। গত তিন বছরে বহরে নতুন বাস ও ট্রাক যোগ না হলেও আয় আড়াই গুণ বেড়েছে। একসময় আট মাস বকেয়া পড়লেও ৮৭৩ জন নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের পরও টানা আড়াই বছর নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন বিআরটিসির কর্মীরা। অপরাধের শাস্তিও পেতে হচ্ছে।
বিআরটিসির বদলে যাওয়ার চিত্র পাওয়া গেল প্রতিষ্ঠানটির নথিতে। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠার পর মাঝে কয়েক বছর বাদ দিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত নিয়মিত লোকসান গুনেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাস ও ট্রাক কেনায় সরকারি ও বিদেশি ঋণের ১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে। সরকারের কিনে দেওয়া বাস-ট্রাক চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে চলতে হয় সংস্থাটিকে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা আয়ের বিপরীতে বিআরটিসির খরচ ছিল ২৬৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সেই বছর লোকসান ৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ৯ মাস বেতন বকেয়া পড়ায় ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি রাজধানীর জোয়ার সাহারা ডিপোতে তালা দেন চালক-শ্রমিকরা। ১৬ মাসের বেতন বকেয়া পড়েছিল নারায়ণগঞ্জ ডিপোতে।
ঘুরে দাঁড়ানো শুরু ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাস, ট্রাক, ওয়ার্কশপ এবং প্রশিক্ষণ থেকে ৩৪৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা আয়ের বিপরীতে পরিচালন ব্যয় হয় ৩৪৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ফলে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা মুনাফা হয়। ওই মুনাফার কারণ ছিল ভারতের ঋণে (এলওসি) ৫৮১ কোটি টাকায় ৬০০টি বাস এবং ২১৭ কোটি টাকায় ৫০০টি ট্রাক কেনা।
পরিচালনায় মুনাফা হলেও তখন পর্যন্ত ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারেনি সংস্থাটি। ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে বিআরটিসি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এই সময়ে বহরে নতুন বাস ও ট্রাক যুক্ত না হলেও ওই অর্থবছরে রেকর্ড ৪৭৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা আয় করে। বিপরীতে খরচ হয় ৪৪০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। মুনাফা হয় ৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এই রেকর্ড ভেঙেছে ২০২২-২৩ অর্থবছরে। গত অর্থবছরে ৬৩১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা আয় করেছে সংস্থাটি। খরচ হয়েছে ৫৮৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। মুনাফা হয়েছে ৪৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েও বিআরটিসি কীভাবে মুনাফা করছে, তা জানতে সংস্থাটির মতিঝিলের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এখানকার চেহারাও বদলে গেছে।
ভবনের নিচতলায় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের মতো চকচকে অভ্যর্থনা কক্ষ তৈরি হয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল কক্ষটি নানা উপকরণে সুজ্জিত। কিংবদন্তি হওয়ার জন্য কারও স্বীকৃতির প্রয়োজন হয় না, ব্যক্তির অদম্য ইচ্ছা এবং কর্মই তাকে কিংবদন্তি হিসেবে গড়ে তোলে। বিআরটিসি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা এবং এর কর্মপরিবেশ দেশের অন্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
শত প্রতিকূল পরিবেশ থাকা অবস্থায় এবং নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কীভাবে সততা, প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে জরাজীর্ণ ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে সার্বিকভাবে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা যায় বর্তমান চেয়ারম্যান তার একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সময়োপযোগী ও সূক্ষ্ম দিকনির্দেশনা এবং সঠিক নেতৃত্বে ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত বিআরটিসি অনেক সফলতা অর্জন করেছে, যা নিম্নরূপ-
১. বর্তমানে প্রধান কার্যালয়সহ ডিপো/ইউনিটের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন-ভাতা নিজস্ব আয় থেকে প্রতি মাসের প্রথম দিনে পরিশোধ করা হচ্ছে।
২. বর্তমানে তিন মাস অন্তর গ্র্যাচুইটি সিপিএফ ও ছুটি নগদায়নের টাকা অনলাইনে পরিশোধ করা হচ্ছে। গত দুই বছরে সিপি ফান্ড, গ্র্যাচুইটি এবং ছুটি নগদায়ন বাবদ ১ হাজার ১৫২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মোট ৩৭ কোটি ৫৮ লাখ ৮৮ হাজার ৯৩৪ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
৩. ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারির পূর্ববর্তী সময়ের বকেয়া বেতন বাবদ দুই বছরে মোট ৯ কোটি ৬৮ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৩ টাকা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের স্ব-স্ব ব্যাংক হিসাবে পরিশোধ করা হয়েছে।
৪. কল্যাণ তহবিল নীতিমালা ২০২২ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০২২ সালে কল্যাণ তহবিল ও শিক্ষা সহায়তা তহবিল খাতে মোট ১৮৪ জনকে ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
৫. সাফজয়ী নারী ফুটবল খেলোয়াড়দের বরণের জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজস্ব দক্ষ কারিগর দ্বারা ছাদখোলা বাস প্রস্তুত করা হয়, যা বিআরটিসির যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
৬. বিআরটিসির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৪ হাজার ৭৯৪ জন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ হাজার ৯৬২ জন নারী ও পুরুষকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
৭. বিআরটিসি-এসইআইএফ প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ হাজার ৫৮৩ জন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৭৪৯ জন নারী ও পুরুষকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
৮. বর্তমানে বিভিন্ন পদে মোট ৭৪০ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে এবং বিভিন্ন পদে ১৩৮ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান আছে।
৯. বিআরটিসির চেয়ারম্যানের প্রচেষ্টা ও দিকনির্দেশনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ২৬৭ জন সি গ্রেডের চালককে চালক-বি পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।
১০. স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিআরটিসির ১০টি বাসে প্রাথমিকভাবে চালকদের জন্য ফ্যাটিগ সতর্কীকরণ ডিভাইস সংযোজন করা হয়েছে।
১১. প্রথমবারের মতো দপ্তর/সংস্থাপ্রধান হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরে চেয়ারম্যান, বিআরটিসি শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছেন।
১২. ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থারসমূহের মধ্যে বিআরটিসি প্রথম স্থান অর্জন করে।
১৩. পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের সুবিধার্থে ২১টি জেলার ২৩টি রুটে ৬০টি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
১৪. দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বিআরটিসির পর্ষদ গঠন ও কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হয়েছে।
১৫. বর্তমান গাড়ির নম্বর অনুসারে মেরামত বাজেট প্রদান করা হয় এবং যথাযথভাবে মনিটর করা হয়।
১৬. পুরোনো গাড়ি নিলামে বিক্রির কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। গত এক বছরে দুটি লটে ২৯৪টি বাস নিলামে বিক্রি করা হয়েছে।
১৭. ৬০৬টি গাড়ি মেরামত করে বিআরটিসির গাড়িবহরে সংযুক্ত করে রাজস্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে। ১৮. প্রত্যেক ডিপো/ইউনিটে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়েছে, যা দ্বারা গাড়ি মেরামতের কার্যক্রম চলমান আছে।
১৯. বর্তমানে কারিগর নিয়োগ দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কাজে দক্ষ করে তোলা হয়েছে।
২০. বিআরটিসির গাজীপুর কেন্দ্রীয় মেরামত কারখানা আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
২১. বর্তমানে বিআরটিসির বহরে সচল বাসের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৩৫০টি। আরও নতুন কিছু গাড়ি বিআরটিসির বহরে শিগগিরই যুক্ত হবে।
২২. বিআরটিসির বিভিন্ন বাস ডিপোতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পেট্রল পাম্পগুলো সচল করা হয়েছে। যার ফলে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জ্বালানি খাতে ব্যয় সাশ্রয় করা সম্ভব হচ্ছে।
২৩. প্রাথমিকভাবে ছয়টি ডিপোতে বিআরটিসি ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট অটোমেশন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিআরটিসির সব ডিপোতে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন-ব্যবস্থা চালু করা হবে। ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট অটোমেন সিস্টেমের ফলে বাস ও ট্রাকের আয়-ব্যয়, যন্ত্রাংশ, জ্বালানিসহ সব কার্যক্রম অনলাইন ও অফলাইনে মনিটর করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
২৪. বিআরটিসিতে ইনহাউস প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
২৫. বর্তমানে শুদ্ধাচার, এপিএ, তথ্য অধিকার, সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি, জিআরএস, ই-গভর্ন্যান্স ও উদ্ভাবন কর্মপরিকল্পনা, কম্পিউটার অপারেটরদের ওরিয়েন্টেশন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা। এ-যাবৎ বিভিন্ন বিষয়ে ৪২টি প্রশিক্ষণে ১ হাজার ৪২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
২৬. বর্তমানে বিআরটিসি কর্তৃক নিয়মিত ত্রৈমাসিক সমাচার ও বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
২৭. প্রধান কার্যালয়সহ প্রতিটি ডিপো/ইউনিটে আইসিটি সেল গঠন করা হয়েছে।
২৮. ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের ভর্তি ও ফি অনলাইনে প্রদান করেছে এবং সিমুলেটর সংযোজন করে আধুনিক করা হয়েছে।
২৯. প্রত্যেক ডিপো/ইউনিটে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক প্রধান কার্যালয় থেকে মনিটর করা হচ্ছে।
৩০. বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়সহ সব ডিপো/ইউনিটে ডিজিটাল হাজিরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
৩১. ১১টি রুটে ই-টিকিটিং ও তিনটি রুটে অনলাইন টিকিটব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
৩২. বর্তমানে বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়সহ প্রত্যেক ডিপো/ইউনিটে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হয়েছে।
৩৩. মতিঝিল বাস ডিপোতে একটি অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের কাউন্টার নির্মাণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন।
৩৪. বর্তমানে যাত্রীসেবা প্রদানের জন্য ‘আমাদের বিআরটিসি’ নামক একটি অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এ অ্যাপের মাধ্যমে জনসাধারণ/সেবাগ্রহণকারী মোবাইল ও ওয়েব ব্রাউজিংয়ের মাধ্যমে বাসের রুট, সঠিক সময় ও অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে।
৩৭. বর্তমান চেয়ারম্যানের যুগোপযোগী ও বহুমুখী সিদ্ধান্তের ফলে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে অনেক গতি সঞ্চারিত হয়েছে। বর্তমানে চারটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও ২০টি ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে বিআরটিসি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
৩৮. বিআরটিসির সব ডিপো/ইউনিটকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে এবং বর্তমানে প্রধান কার্যালয় থেকে ডিপো হালকা মেরামত, ভারী মেরামত ও নিরাপত্তাসহ সব কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মনে করেন, পরিবহন সেক্টরের মূল চালিকাশক্তি হলো গাড়ি। যদি গাড়ি ঠিক থাকে, গাড়ির পরিচালনা ও অপরেশন যদি ঠিক থাকে, ইনকাম যদি ঠিকভাবে হয় এর টাকা চুরি না হয়ে ফান্ডে জমা পরে, তবেই প্রতিষ্ঠান লাভবান হয়।
আমি চেয়ারম্যান হিসেবে বিআরটিসিতে আসার আগে গণমাধ্যমে নিউজ হতো এই খাতে ডোবার আর কিছু বাকি নেই। সেই অবস্থার উত্তোরণ হয়েছে এখন। অর্থমন্ত্রণালয় থেকে কোনো টাকা না এনে প্রাতিষ্ঠানিক ইনকামের টাকা দিয়ে এখন আমরা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি।
কিন্তু আমাদের সাফল্যের পরেও কিছু বিশ্বাসঘাতক ও দুষ্কৃতিকারী উন্নয়নের চাকা পেছনে টানছে, সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে তাদেরও টেনে ধরতে হবে।
পিকে/এসপি
যোগদানের পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় ‘আয় বৃদ্ধি, ব্যয় সংকোচন ও যাত্রীসেবার মান উন্নয়ন’ এই ব্রত নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। তারই হাত ধরে একসময়ের জরাজীর্ণ ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বিআরটিসি আজ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে আলোকিত হয়েছে চারিদিক।
যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন ও পণ্য পরিবহন সেবায় ‘জনগণের অন্তরে স্থান পেয়েছে বিআরটিসি’। বছরের পর বছর লোকেসানে থাকা এই প্রতিষ্ঠানটি লোকসান কমিয়ে বর্তমানে লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। সুনামের এ ধারা অব্যাহত রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব)।
যিনি এখানে যোগদানের পর অনেকাংশে পাল্টে গেছে রাষ্ট্রায়ত্ত এই সংস্থাটির চিত্র। দক্ষ তত্বাবধায়নের ফলে বর্তমানে বেতন, বিভিন্ন ভাতা, প্রতেঙ্গায় পর্যটক বাস, দেশের ২০ স্থানে কারিগরি প্রশিক্ষণসহ দেশের ৬৩ জেলায় নিরবচ্ছিন্ন যাত্রী সেবা দিচ্ছে বিআরটিসি।
বিআরটিসি তার জনকল্যাণকর কাজের জন্য বিভিন্ন মহলে প্রশসিংত হয়েছে। যার স্বীকৃতিস্বরুপ ২০২১-২২ অর্থবছরে এপিও বাস্তবায়নে ১ম স্থান, মন্ত্রণালয়ের অধিনস্ত প্রতিষ্ঠান প্রধানদের শুদ্ধাচার পুরস্কার অর্জন করেছে। সরকারি বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের মতো লোকসানে ধুঁকতে থাকা সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
হাজার কোটি টাকা ঋণের ভারে ন্যুব্জ প্রতিষ্ঠানটি এখন লাভের মুখ দেখেছে। ধারাবাহিক মুনাফা করছে। গত তিন বছরে বহরে নতুন বাস ও ট্রাক যোগ না হলেও আয় আড়াই গুণ বেড়েছে। একসময় আট মাস বকেয়া পড়লেও ৮৭৩ জন নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের পরও টানা আড়াই বছর নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন বিআরটিসির কর্মীরা। অপরাধের শাস্তিও পেতে হচ্ছে।
বিআরটিসির বদলে যাওয়ার চিত্র পাওয়া গেল প্রতিষ্ঠানটির নথিতে। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠার পর মাঝে কয়েক বছর বাদ দিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত নিয়মিত লোকসান গুনেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাস ও ট্রাক কেনায় সরকারি ও বিদেশি ঋণের ১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে। সরকারের কিনে দেওয়া বাস-ট্রাক চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে চলতে হয় সংস্থাটিকে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা আয়ের বিপরীতে বিআরটিসির খরচ ছিল ২৬৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সেই বছর লোকসান ৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ৯ মাস বেতন বকেয়া পড়ায় ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি রাজধানীর জোয়ার সাহারা ডিপোতে তালা দেন চালক-শ্রমিকরা। ১৬ মাসের বেতন বকেয়া পড়েছিল নারায়ণগঞ্জ ডিপোতে।
ঘুরে দাঁড়ানো শুরু ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাস, ট্রাক, ওয়ার্কশপ এবং প্রশিক্ষণ থেকে ৩৪৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা আয়ের বিপরীতে পরিচালন ব্যয় হয় ৩৪৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ফলে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা মুনাফা হয়। ওই মুনাফার কারণ ছিল ভারতের ঋণে (এলওসি) ৫৮১ কোটি টাকায় ৬০০টি বাস এবং ২১৭ কোটি টাকায় ৫০০টি ট্রাক কেনা।
পরিচালনায় মুনাফা হলেও তখন পর্যন্ত ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারেনি সংস্থাটি। ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে বিআরটিসি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এই সময়ে বহরে নতুন বাস ও ট্রাক যুক্ত না হলেও ওই অর্থবছরে রেকর্ড ৪৭৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা আয় করে। বিপরীতে খরচ হয় ৪৪০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। মুনাফা হয় ৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এই রেকর্ড ভেঙেছে ২০২২-২৩ অর্থবছরে। গত অর্থবছরে ৬৩১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা আয় করেছে সংস্থাটি। খরচ হয়েছে ৫৮৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। মুনাফা হয়েছে ৪৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েও বিআরটিসি কীভাবে মুনাফা করছে, তা জানতে সংস্থাটির মতিঝিলের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এখানকার চেহারাও বদলে গেছে।
ভবনের নিচতলায় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের মতো চকচকে অভ্যর্থনা কক্ষ তৈরি হয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল কক্ষটি নানা উপকরণে সুজ্জিত। কিংবদন্তি হওয়ার জন্য কারও স্বীকৃতির প্রয়োজন হয় না, ব্যক্তির অদম্য ইচ্ছা এবং কর্মই তাকে কিংবদন্তি হিসেবে গড়ে তোলে। বিআরটিসি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা এবং এর কর্মপরিবেশ দেশের অন্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
শত প্রতিকূল পরিবেশ থাকা অবস্থায় এবং নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কীভাবে সততা, প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে জরাজীর্ণ ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে সার্বিকভাবে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা যায় বর্তমান চেয়ারম্যান তার একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সময়োপযোগী ও সূক্ষ্ম দিকনির্দেশনা এবং সঠিক নেতৃত্বে ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত বিআরটিসি অনেক সফলতা অর্জন করেছে, যা নিম্নরূপ-
১. বর্তমানে প্রধান কার্যালয়সহ ডিপো/ইউনিটের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন-ভাতা নিজস্ব আয় থেকে প্রতি মাসের প্রথম দিনে পরিশোধ করা হচ্ছে।
২. বর্তমানে তিন মাস অন্তর গ্র্যাচুইটি সিপিএফ ও ছুটি নগদায়নের টাকা অনলাইনে পরিশোধ করা হচ্ছে। গত দুই বছরে সিপি ফান্ড, গ্র্যাচুইটি এবং ছুটি নগদায়ন বাবদ ১ হাজার ১৫২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মোট ৩৭ কোটি ৫৮ লাখ ৮৮ হাজার ৯৩৪ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
৩. ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারির পূর্ববর্তী সময়ের বকেয়া বেতন বাবদ দুই বছরে মোট ৯ কোটি ৬৮ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৩ টাকা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের স্ব-স্ব ব্যাংক হিসাবে পরিশোধ করা হয়েছে।
৪. কল্যাণ তহবিল নীতিমালা ২০২২ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০২২ সালে কল্যাণ তহবিল ও শিক্ষা সহায়তা তহবিল খাতে মোট ১৮৪ জনকে ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
৫. সাফজয়ী নারী ফুটবল খেলোয়াড়দের বরণের জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজস্ব দক্ষ কারিগর দ্বারা ছাদখোলা বাস প্রস্তুত করা হয়, যা বিআরটিসির যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
৬. বিআরটিসির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৪ হাজার ৭৯৪ জন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ হাজার ৯৬২ জন নারী ও পুরুষকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
৭. বিআরটিসি-এসইআইএফ প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ হাজার ৫৮৩ জন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৭৪৯ জন নারী ও পুরুষকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
৮. বর্তমানে বিভিন্ন পদে মোট ৭৪০ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে এবং বিভিন্ন পদে ১৩৮ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান আছে।
৯. বিআরটিসির চেয়ারম্যানের প্রচেষ্টা ও দিকনির্দেশনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ২৬৭ জন সি গ্রেডের চালককে চালক-বি পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।
১০. স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিআরটিসির ১০টি বাসে প্রাথমিকভাবে চালকদের জন্য ফ্যাটিগ সতর্কীকরণ ডিভাইস সংযোজন করা হয়েছে।
১১. প্রথমবারের মতো দপ্তর/সংস্থাপ্রধান হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরে চেয়ারম্যান, বিআরটিসি শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছেন।
১২. ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থারসমূহের মধ্যে বিআরটিসি প্রথম স্থান অর্জন করে।
১৩. পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের সুবিধার্থে ২১টি জেলার ২৩টি রুটে ৬০টি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
১৪. দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বিআরটিসির পর্ষদ গঠন ও কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হয়েছে।
১৫. বর্তমান গাড়ির নম্বর অনুসারে মেরামত বাজেট প্রদান করা হয় এবং যথাযথভাবে মনিটর করা হয়।
১৬. পুরোনো গাড়ি নিলামে বিক্রির কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। গত এক বছরে দুটি লটে ২৯৪টি বাস নিলামে বিক্রি করা হয়েছে।
১৭. ৬০৬টি গাড়ি মেরামত করে বিআরটিসির গাড়িবহরে সংযুক্ত করে রাজস্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে। ১৮. প্রত্যেক ডিপো/ইউনিটে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়েছে, যা দ্বারা গাড়ি মেরামতের কার্যক্রম চলমান আছে।
১৯. বর্তমানে কারিগর নিয়োগ দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কাজে দক্ষ করে তোলা হয়েছে।
২০. বিআরটিসির গাজীপুর কেন্দ্রীয় মেরামত কারখানা আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
২১. বর্তমানে বিআরটিসির বহরে সচল বাসের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৩৫০টি। আরও নতুন কিছু গাড়ি বিআরটিসির বহরে শিগগিরই যুক্ত হবে।
২২. বিআরটিসির বিভিন্ন বাস ডিপোতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পেট্রল পাম্পগুলো সচল করা হয়েছে। যার ফলে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জ্বালানি খাতে ব্যয় সাশ্রয় করা সম্ভব হচ্ছে।
২৩. প্রাথমিকভাবে ছয়টি ডিপোতে বিআরটিসি ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট অটোমেশন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিআরটিসির সব ডিপোতে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন-ব্যবস্থা চালু করা হবে। ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট অটোমেন সিস্টেমের ফলে বাস ও ট্রাকের আয়-ব্যয়, যন্ত্রাংশ, জ্বালানিসহ সব কার্যক্রম অনলাইন ও অফলাইনে মনিটর করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
২৪. বিআরটিসিতে ইনহাউস প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
২৫. বর্তমানে শুদ্ধাচার, এপিএ, তথ্য অধিকার, সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি, জিআরএস, ই-গভর্ন্যান্স ও উদ্ভাবন কর্মপরিকল্পনা, কম্পিউটার অপারেটরদের ওরিয়েন্টেশন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা। এ-যাবৎ বিভিন্ন বিষয়ে ৪২টি প্রশিক্ষণে ১ হাজার ৪২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
২৬. বর্তমানে বিআরটিসি কর্তৃক নিয়মিত ত্রৈমাসিক সমাচার ও বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
২৭. প্রধান কার্যালয়সহ প্রতিটি ডিপো/ইউনিটে আইসিটি সেল গঠন করা হয়েছে।
২৮. ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের ভর্তি ও ফি অনলাইনে প্রদান করেছে এবং সিমুলেটর সংযোজন করে আধুনিক করা হয়েছে।
২৯. প্রত্যেক ডিপো/ইউনিটে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক প্রধান কার্যালয় থেকে মনিটর করা হচ্ছে।
৩০. বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়সহ সব ডিপো/ইউনিটে ডিজিটাল হাজিরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
৩১. ১১টি রুটে ই-টিকিটিং ও তিনটি রুটে অনলাইন টিকিটব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
৩২. বর্তমানে বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়সহ প্রত্যেক ডিপো/ইউনিটে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হয়েছে।
৩৩. মতিঝিল বাস ডিপোতে একটি অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের কাউন্টার নির্মাণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন।
৩৪. বর্তমানে যাত্রীসেবা প্রদানের জন্য ‘আমাদের বিআরটিসি’ নামক একটি অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এ অ্যাপের মাধ্যমে জনসাধারণ/সেবাগ্রহণকারী মোবাইল ও ওয়েব ব্রাউজিংয়ের মাধ্যমে বাসের রুট, সঠিক সময় ও অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে।
৩৭. বর্তমান চেয়ারম্যানের যুগোপযোগী ও বহুমুখী সিদ্ধান্তের ফলে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে অনেক গতি সঞ্চারিত হয়েছে। বর্তমানে চারটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও ২০টি ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে বিআরটিসি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
৩৮. বিআরটিসির সব ডিপো/ইউনিটকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে এবং বর্তমানে প্রধান কার্যালয় থেকে ডিপো হালকা মেরামত, ভারী মেরামত ও নিরাপত্তাসহ সব কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মনে করেন, পরিবহন সেক্টরের মূল চালিকাশক্তি হলো গাড়ি। যদি গাড়ি ঠিক থাকে, গাড়ির পরিচালনা ও অপরেশন যদি ঠিক থাকে, ইনকাম যদি ঠিকভাবে হয় এর টাকা চুরি না হয়ে ফান্ডে জমা পরে, তবেই প্রতিষ্ঠান লাভবান হয়।
আমি চেয়ারম্যান হিসেবে বিআরটিসিতে আসার আগে গণমাধ্যমে নিউজ হতো এই খাতে ডোবার আর কিছু বাকি নেই। সেই অবস্থার উত্তোরণ হয়েছে এখন। অর্থমন্ত্রণালয় থেকে কোনো টাকা না এনে প্রাতিষ্ঠানিক ইনকামের টাকা দিয়ে এখন আমরা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি।
কিন্তু আমাদের সাফল্যের পরেও কিছু বিশ্বাসঘাতক ও দুষ্কৃতিকারী উন্নয়নের চাকা পেছনে টানছে, সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে তাদেরও টেনে ধরতে হবে।
পিকে/এসপি