রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
ProdhanKhabor | Popular NewsPaper of Bangladesh
রবিবার ২৪ অগাস্ট ২০২৫ ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পাঁচওয়াক্ত নামাজে কি পড়া হয় এবং অর্থ কী? দাউদকান্দিতে নিরাপদ অভিবাসনে করণীয় বিষয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ জাতীয় স্বর্ণ পদক পাওয়ায় রহমত আলীকে সংবর্ধনা দিলো উপজেলা প্রশাসন ২৫ বছর ধরে মাছ উৎপাদন করে আসছি: স্বর্ণপদকে ভূষিত রহমত আলী দাউদকান্দির নবাগত ইউএনও নাছরিন আক্তারকে ধানসিঁড়ি সমাজকল্যাণ পরিষদের ফুলেল শুভেচ্ছা ডাকসু নির্বাচনে সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন দাউদকান্দির হাসিব রানা জুরানপুর আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদস্য হলেন সাবেক ছাত্রনেতা নুরুজ্জামান ভবঘুরে লোকদের উচ্ছেদ করে নিরাপদ ক্যাম্পাস উপহার দিতে চাই: ডাকসু ভিপি প্রার্থী জাহিদ দাউদকান্দিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহনে জুলাই ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে দাউদকান্দিতে নারীদের বেকিং প্রশিক্ষণ বিএনপি করলে চাঁদাবাজি করা যাবে না: হেলাল খাঁন দাউদকান্দির দুর্গাপুর গ্রামে মাদকের বিরুদ্ধে সাঁঁতার প্রতিযোগিতা আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন দাউদকান্দির সন্তান জাহিদ হাসান আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন দাউদকান্দির সন্তান সুফি আহমেদ এখানে নীল জলরাশির সাথে মেঘেরা আলিঙ্গন করে দাউদকান্দিতে গাছের চারা পেলো ৫০০ শিক্ষার্থী আসন পুর্নবহালের দাবীতে দাউদকান্দিতে খেলাফত মজলিসের মানববন্ধন যুবকরাই আমাদের শক্তি ও বিপ্লবের মহানায়ক: মনিরুজ্জামান বাহলুল নির্বাচন নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র হতে দেয়া যাবে না: ড. খন্দকার মোশাররফ আমাদের নেতা তারেক রহমানকে এদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই: খন্দকার মারুফ
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা

"সাপ-শিয়ালের আস্তানায় এখন ফুলবাগান"

"সাপ-শিয়ালের আস্তানায় এখন ফুলবাগান"
কিছুদিন আগেও হরহামেশায় চলাফেরা করতো বিষধর গোখরা সাপরা। মনে হয়েছিলো এই যায়গাটি ওদের স্বাধীন ভূমি। আর শিয়ালরাতো রীতো মতো ব্যারকই তৈরী করে ফেলেছিলো। নিজের মতো ঘুরাঘুরি। ভবনের চারিপাশ ঘেরাও করা। শুধু তাই নয়, সন্ধ্যা হলে দলবেঁধে আসতো খাবারের জন্য। দিনের বেলায়ও ছিলো অবাধ ছুঁটাছুঁটি। বনজঙ্গল আর আগাছায় পরিপূর্ণ ছিলো ভবনের চারিপাশ। দূর থেকে তাকালে কোন রেস্ট হাউস বা বাংলো মনে হতো। স্থানীয়রাও এখানে তেমন আসতো না। বলছি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে একশ গজ দূরে দাউদকান্দির হাসানপুরে অবস্থিত নবনির্মিত দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার কথা।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার জন্য ওই এলাকার ৫ একর জমি ক্রয় করে সরকার। ওই জমিতে কাজ শুরু হয় হাইওয়ে ভবন নির্মানের। ৫ একর জমির এক পাশে ভবন নির্মান করা হলেও অন্যপাশে পতিত রয়ে যায় অনেক জমি। আর ওই জমির চারিপাশে মাটি ভরাটের মাধ্যমে পাড়, বাঁধ বা বাউন্ডারী তৈরী করা হয়। ভবন তৈরীর কয়েকবছরে ইতিমধ্যে এই জমির চারিপাশ বনজঙ্গলে পরিনত হয়েছে।

আর এখানে বাসা বেঁধেছে সাপ, শিয়াল, ইদুরসহ নানাহ বিষধর পোকামাকড়। গেল বছরের জুলাই মাসে দাউদকান্দি বিশ্বরোড থেকে হাইওয়ে থানার অস্থায়ী কার্যালয় উপজেলার হাসানপুরে নির্মিত এই নতুন ভবনটিতে উঠে পুলিশ সদস্যরা। আর উঠেই নানান বিড়ম্বনায় পরতে হয় তাঁদের। দিনের বেলা যেভাবেই কাটুক সন্ধ্যা হলেই ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। চারিপাশে কোন মানুষের আনাগোনা নেই। সন্ধ্যা হলেই থানাচত্বরে দলবেঁধে শিয়াল আসে। আবার সাপেরাতো আছেই। চারিদেকে আগাছা-বনজঙ্গল। নিঃশব্দহীন এক নিবিড় পরিবেশে ভয়ভয় আতঙ্কে কাটে কিছুদিন।

শিয়ালদের আনোগোনা দেখে নিয়মিত খাবার দিত পুলিশ সদস্যরা। অথাৎ খাবারের উৎছিষ্ট অংশ ফেল দিলে শিয়ালরা এগুলো খেতে আসতো। আর এটাও নিয়মে পরিনত হয়েছিলো।

কিন্তু এখনকার চিত্র ভিন্ন। দেখলে মনেই হবে না। কিছুদিন পূর্বেও যেখানে সাপ-শিয়ালদের আস্তানা ছিলো। সেখানে এখন এতো পরিবর্তন। ফুলে-ফুলে সেঁজেছে থানা ভবন চত্বর। মূলভবনের সামনে খালি যায়গা মাটি ভরাট করে নির্মান করা হয়েছে মাঠ। তৈরী করা হয়েছে সেলেটিং ব্রী, ব্যাডমিন্টন মাঠ। পতিত জমিকে পুকুরে রুপান্ত করে সেই পুকুরে নির্মান করা হয়েছে পাকা ঘাটলা। থানা সীমানার চারিপাশে মাটির উচু বাউন্ডারী নির্মান। মহাসড়কের পাশে ও থানা ভবনের উপরে আধুনিক সাইন বোড স্থাপন। সাপুড়ি এনে ধরা হয়েছে বেশ কয়েকটি বিষধর গোখরা। বন-জঙ্গল কেটে, করা হয়েছে পরিস্কার। নিয়ন বাতির আলোয় আলোকিত এখন থানা এলাকা। দিনের বেলায় নানাহ ফুলের আকর্ষন আর রাতের বেলায় বৈদ্যুতিক লাইটের আলোয় আকৃষ্ট করেছে এখানকার পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দাসহ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের।

তাইতো, একসময় যেখানে মানুষের আনাগোনা ছিলোইনা এখন সেখানে বিকাল হলেই শারীর চর্চ (ব্যায়াম) করতে দেখা যায় স্থানীয়দেরকে। বিশেষ করে থানার পুকুর পাড়ে তাঁদের হাটতে দেখা যায়। এছাড়াও পথচারী ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এখানে ঘুরতে আসে। ছবি তুলতেও দেখা গেছে। এখানকার যে বিষয় সবাইকে আরো আকৃষ্ট করছে। সেটা হলো। বিশাল পুকুর এলাকায় মাঝখানে রয়েছে একটি দ্বীপ। সেই দ্বীপে রয়েছে বড়বড় গাছ-গাছালি। সন্ধ্যার পরে দ্বীপঅঞ্চলটিকে আরো দারুন লাগে। সবারই ওই দ্বীপে যেতে ইচ্ছে করে কিন্তু দ্বীপে যেতে এখনো কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরী হয়নি।

এছাড়াও মহাসড়ক থেকে থানা ভবনে আসতে একশ গজ সড়কের মধ্যে রোপন করা হয়েছে ২০টি আম গাছ। ভবনের চারিপাশে ৬০টি নারিকেলের চারা ও ১০০টি সুপারি গাছসহ বিভিন্ন ফলদ গাছ রোপন করা হয়েছে। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য, গোলাপ,গন্ধরাজ, রজনী গন্ধাসহ নানাহ ফুলের চারা রোপন করা হয়। এছাড়াও থানায় বসবাসরত পুলিশ সদস্য ও আগত দর্শনার্থীদের বিশুদ্ধ পানির জন্য স্থাপন করা হয়েছে গভীর নলকূপ। তাইতো দাউদকান্দি দাউদকান্দি হাইওয়ে থানায় সাপ-শিয়ালের আস্তানায় এখন ফুলবাগানে পরিনত হয়েছে।

আর এই কাজগুলো যিনি আপন মনে করেছেন, কালো চামড়ার সুন্দর মনের মানুষ। যিঁনি চাকুরী জীবনে যেখানেই গেছেন, সেখানেই তাঁর সু-কর্মের স্বাক্ষরতা রেখে এসেছেন। তারই উৎকৃষ্ট উদাহরন দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা। বলছি, হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর আলমের কথা।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২০২২ সালের ৪ আগস্ট আমি দাউদকান্দি হাইওয়ে থানায় যোগদান করি। যোগদান করেই এখানকার অনেক সমস্যা চোখে পরে, থানার চারিপাশ বনজঙ্গলে ভরপুর, সাপ-শিয়ালের আতঙ্ক, বিশুদ্ধ পানি নেই, লোকজনের আনাগোনা নেই। এযেন ভূতুড়ে পরিবেশ। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম কিছু করার। প্রথমেই এখানকার সংসদ সদস্য মেজর জেনারের (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিনুল হাসানের নিকট হাইওয়ে থানার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলি। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও স্যার পরিদর্শন করতে আসে। তারপর এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও স্যার ও আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ শুরু করি।

শুরুতেই, মূলভবনের পেছনের মাটি সরে যাওয়ার ভবনে ফাটলের সৃষ্টি হতে পারে। তাই চারিপাশে মাটি ভরাট করি। মহাসড়ক থেকে শতফুট দৃরত্বে ভবনে আসার পথে বিভিন্ন ফুল ও ফল গাছ রোপন করি। মাটি ভরাট করে মাঠ নির্মান, আগাছা পরিস্কার করে পুকুরে রুপান্তর এছাড়াও অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করি। বর্তামানে থানা এলাকার সৌন্দর্য দেখে পথচারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষাথীরা এখানে ঘুরতে আসে এবং ছবিতুলে। স্থানীয়রা এটার সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিকেল বেলা পুকুর পাড়ে বেয়াম করতে আসে। এটা করতে পেরে আমি আনন্দিত।

এএসআই মো. মতিউর রহমান বলেন, ২০ মে ২০২২ সালে থানায় যোগদান করি। এসে দেখি, থানা ভবনের চারিপাশ বন-জঙ্গলে ভরপুর। মাঝে মধ্যে বিষধর সাপ চলাচল করতে দেখা যায় এবং শিয়ালরা অবাধ বিচরণ করে। সে সময় ছিলো বর্ষা মৌসুম। তখন চারিদিকে পানিতে ভরপুর। তখন শিয়ালগুলো থানা চত্বরের পাশেই বসবাস করতো। এবং দিনের বেলায়ও লোকজনের সামনেই চলাচল করতো। আমি তাদেরকে খাবারো দিতাম। জাহাঙ্গীর স্যার যোগদান করে এখানকার আমূল পরিবর্তন করে। এখন থানা এলাকা আগের তুলনায় অনেক সুন্দর।

এএসআই নূরমোহাম্মদ বলেন, আমি ৫ মাস হয় যোগদান করি। এখানে যেই পরিবেশ ছিলো তা, থাকার মতো ছিলাে না। বেশকয়েকটি সাপ আমি নিজেও মেরেছি। স্যার যোগদান করার পরে চোখের সামনেই একটি কাজের বিপ্লব দেখলাম। আমি বিশ্বাস করি, কিছুদিন পূর্বে যে এখানে এসেছিলো, আজকে আসলে সে অবাক হবে।

দাউদকান্দি নাগরিক ফোরামের যুগ্মআহ্বায়ক হাজ্বী মো. আলী আহাম্মেদ মিয়াজী বলেন, সুন্দর মনের জন্য সুন্দর পরিবেশ তৈরী করা প্রয়োজন। আমাদের চারিপাশ পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে আমরা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারি। তেমনটিই হয়েছে দাউদকান্দি হাইওয়ে থানায়।

দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কমর্কর্তা মো. মহিনুল হাসান বলেন, হাইওয়ে থানার ওসির আমন্ত্রনে একদিন দেখতে যাই। সেখানে অনেক সমস্যা চোখে পড়ে। আমরা উপজেলা পরিষদ থেকে একটি ঘাটলা ও একটি গভীর নলকূপ বরাদ্দ প্রদান করি। এগুলো বর্তমানে বাস্তবায়ন হয়েছে। অফিসার ইনচার্জ একজন উদ্যোগী মানুষ। ওনার হাতধরে মহাসড়কের পাশে একটি দৃষ্টিনন্দন হাইওয়ে থানায় রুপান্তরিত হয়েছে, দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা।

পুলিশকে নিয়ে আমাদের সমাজে নানান পজিটিভ/নেগেটিভ কথা চলমান। কিন্তু এর বাইরেও মানবিক ও উদ্যোগী পুলিশের খবর ক'জনইবা রাখে। পরিচ্ছন্ন ও সুন্দরের পূজারী জাহাঙ্গীর আলমদের মতো পুলিশ অফিসার অবশ্যই এই ডিপার্টমেন্টের জন্য গৌরব করার মতো। জাহাঙ্গীরের মতো অনুকরণীয় পুলিশ অফিসার প্রতিটি থানায় তৈরী হউক। এমনটাই প্রত্যাশা সু-শীল ও সাধারণ জনগন।

পিকে/এসপি
পাঁচওয়াক্ত নামাজে কি পড়া হয় এবং অর্থ কী?

পাঁচওয়াক্ত নামাজে কি পড়া হয় এবং অর্থ কী?