সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
ProdhanKhabor | Popular NewsPaper of Bangladesh
সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস পরিবর্তন হচ্ছে: ভিসি ১৬ বছরপর উন্মুক্ত মাঠে অনুষ্ঠিত হলো দাউদকান্দি জামায়াতের কর্মী সম্মেলন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাদেকপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা মানবিক মালীগাঁও ইউনিয়নের আয়োজনে নিহতদের স্মরণে দোয়ার অনুষ্ঠান দাউদকান্দি উপজেলা জামায়াতের কমিটি গঠন বাহলুল-আমীর, মনিরুজ্জামান-সেক্রেটারী বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আশার উদ্যোগে নবীনগরে ফিজিওথেরাপি ক্যাম্পের উদ্বোধন দিল্লি বসে শেখ হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে: মাসুদ সাঈদী ইসরায়েলের ৫ সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর রকেট হামলা হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটির উদ্যোগে দাউদকান্দিতে বহুমুখী কারিগরি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন দাউদকান্দি উপজেলা ও পৌরসভার নবনির্বাচিত আমীরদ্বয়ের শপথ অনুষ্ঠান উপলক্ষে রুকন সম্মেলন দোয়া কবুলের উত্তম সময় জুমার দিন | প্রধান খবর সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিবর্তন হবে: সাংবাদিকনেতা মোশারফ দ্যা অ্যাকাউন্ট্যান্টস ক্লাবের এজিএম অনুষ্ঠিত নৈয়াইর সায়েন্স স্কুল এন্ড কলেজে কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত সাকিব আল হাসানের সকল ব্যাংক হিসাব জব্দ রংপুরে জামায়াতের হিন্দু শাখার কমিটি গঠন | প্রধান খবর সোনাগাজী রিপোর্টার্স ইউনিটির কমিটিতে সভাপতি ইকবাল-সম্পাদক সাব্বির | প্রধান খবর প্রতিরোধের মুখে ইরানে হামলার সমাপ্তি ঘোষণা ইসরায়েলের আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুলে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত | প্রধান খবর বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ওষুধ বিতরণ
কুমিল্লার দাউদকান্দির একটি নদীর নাম

এখন আর খিরাই নদীতে জোঁয়ার আসেনা' তাঁর গায়ে হেলান দেয়া মাঠে সোনালী ফসল ফলেনা

এখন আর খিরাই নদীতে জোঁয়ার আসেনা' তাঁর  গায়ে হেলান দেয়া মাঠে সোনালী ফসল ফলেনা
খিরাই নদীর কোল ঘেঁষে আমাদের ফসলের মাঠ। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম দাদা-বাবা, চাচা-জেঠারা নানান ফসল (আলু-ধান, সরিষা, গম, মশুরা, মুলা, কাউন ও কলুই)এর আবাধ করতো। খিরাই নদীরও তখন ভরা যৌবন ছিলো। জোয়ারের পানিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হতো নদীর চারিপাশ। গরুর উপর চড়ে কতবার যে নদী পাড়ি দিয়েছি তাঁর হিসেব নেই।

নদীর পার সুন্দর মতো ছেছে পিছলি খেতাম। সাঁতার প্রতিযোগিতা ও লাই খেলতাম। ১-২ ঘন্টা সাঁতার কাটার পর চোখ লাল হতো। তারপর বাড়ীতে গিয়ে কখনো কখনো মায়ের হাতে মার খেতাম।

সে সময়ে আমাদের আনন্দের ফসল ছিলো আলু। আর গম ছিলো বিরক্তের। কারন, আলু বড় হলে মাঠেই সিদ্ধ করে খেতাম। আর গম রোপন থেকে শুরু করে বাড়ী আনা পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল বিকাল কাউয়া তারাতে হতো। ফসলের মাঠ থেকে আলু ঘড়ে তোলার মৌসুম। সে অনেক আনন্দের ছিলো। জমি থেকে নতুন আলু তুলে বাড়ী নিয়ে সিদ্ধ করে আবার ফসলের মাঠে নিয়ে যেতাম। বদলীসহ অন্যজমির লোকজনও খুবই আনন্দ করে আলু সিদ্ধ খেতো। বড়াবড়রই, সিদ্ধ আলুর বোঝাটা আমি নিতাম আর যেতে যেতে খেতাম। ইরি ধান কাটার মৌসুম। বর্ষার পানি ছুঁই ছুঁই অবস্থা। কখনো কখনো জোয়ারে ডুবে যেতো। বদলিরা ধান কেটে ছোট ছোট আটি করে বেঁধে লম্বা রেল গাড়ী বানিয়ে পানিতে ভাষাতো। এগুলো আবার এক মাথায় ধরে টেনে বাড়ী নিয়ে আসতাম। সচ্ছ পানিতে সুযোগ পেয়ে অতিরিক্ত ডুবাতাম। পরিপূর্ণ বর্ষা যখন হতো। ফসলের জমিগুলো ১৫ /২০ ফুট পানির নিচে থাকতো। উপরে থৈই থৈই পানি। বাতাসে ডেউ হতো। ভোরের সকালটা ছিলো শাপলা ফুলের সমারোহে পরিপূর্ণ। পানিতে সেওলার পাহাড় হতো। আমরা তখন চোখ মেলে ডুব দিয়ে সেওলার ভিতরে ডুকতাম। আর বইচা মাছরা আমাদের সাথে খেলা করতো। সে সময় কারুকার্যপূর্ন অসাধারণ বইচা মাছ অহরহ দেখতাম।

নৌকা নিয়ে অনেক সময় প্রতিযোগিতা করতাম। বর্ষা শেষ কার্তিক মাস। পানি চলে যাওয়ায় পালা। আমাদের মধ্যে যাঁদের খিরাই নদীর পাড়ে জমি ছিলো। তাঁরা ছিলো খুবই ভাগ্যবান। কেননা, পুরো বর্ষাজুঁড়ে প্রাকৃতিক যে মাছ উৎপাদন হতো। তা খিরাই নদীতে পানির সাথে নামতো। যাঁদের জমি খিরাই নদীর পাড়ে ছিলো প্রত্যেকে ড্রেন করতো। ড্রেনের মাথায় আন্তা পেতে তার উপরে পেলুন জাল বসাতো। ছোট মাছগুলো আনতায় প্রবেশ করতো আর বড় মাছগুলো লাফিয়ে জালে পড়তো।

মাছ ধরার উৎসব থাকতো ১০-১৫দিন। আমরা নদীর পাড়ে ডেরা বানিয়ে ঘুমাতাম। গ্রামের বন্ধু কামাল, বিল্লাল, নাজির ও আমি প্রায়ই ডেরায় থাকতাম। সকাল হলে অনেকেই ওরা ভরে বাড়ীতে মাছ নিয়ে আসতাম। মাছগুলোর মধ্যে ছিলো, পুটি, সইল, বইচা, চান্দা, চিংড়িগুড়া, কই, টাকি, চেদুরী। মাঝে মাঝে বোয়াল, রুই, কাতল ও কাপ জাতীয় মাছ পাওয়া যেতে। সে সময়ে চোখেই দেখতাম শতশত প্রাকৃতিক মাছের একসাথে সারিবদ্ধ হয়ে পানির সাথে ড্রেনে প্রবেশ করতো। লাফিয়ে জালে উঠতো। এগুলো এখন স্বপ্নের মতো। কার্তিক মাস শেসে কৃষকের নানান প্রস্তুতী। নানান ফসলের রংয়ে আলোকিত হতো আমাদের মাঠ। আহা কীসুন্দরইনা ছিলো আমাদের ফসলের মাঠ-আমাদের শৈসব।

খীরাই নদীতে এখন আর জোয়ার আসেনা। আগের মতো গরু নিয়ে সাতাঁর কাটারও কোন সুযোগ নেই। ফসলের মাঠে নেই, সেই সোনালী ফসলের আবাদ। মাঠ যেন কোন অজ্ঞাত রোগে আক্রন্ত। দেখলে মনে হবে কোন যুদ্ধ বিধ্বস্ত পরিত্যক্ত কোন ভূমি। কোন জমিতে ফসল আছে কোনটায় নেই, আবার যেগুলোতে আছে এগুলোরও ভালো অবস্থা নেই। মশুরা-কলুই, সরিষা আর গম যেন স্বপ্নের মতো। পুরো মাঠ খুঁজে একখন্ড জমিও পাওয়া যাবে না। আগ্রাসী ফসল ভূট্ট দখল নিয়েছে। আবার হায়েনার মতো হানা দিয়েছে ভূমি খেকুরা। অনেক ফসলী জমি কেটে সাবার করে ফেলেছে। মাঠের একধিকে গর্ত আরেক দিকে পরিত্যক্ত এযেন আসলেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত। আজ সকলে অনেকদিন পর ফসলের মাঠে গিয়ে প্রান ভরে হাঁটি। কিন্তু মাঠের এই অবস্থা দেখে ভিতরটা কেঁদে উঠে। আমরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কী রেখে যাচ্ছি। আমরা আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করছি। সরকারের কঠোর উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন যেন ওই ভূমি দস্যুরা আর ফসলী জমি না কাটতে পারে। প্রকৃতির নিকট প্রত্যাশা খিরাই নদী আবার কানায় কানায় পরিপূর্ণ হবে পানিতে আর মাঠে হাসবে সোনালী ফসল।

লেখক: শরীফ প্রধান
১৬ জানুয়ারী ২০২২
সমাজকর্মী।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস পরিবর্তন হচ্ছে: ভিসি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস পরিবর্তন হচ্ছে: ভিসি