শিশুকালে হাড় শক্ত করতে চাই ‘ক্যালসিয়াম’
এ কে এম রাশেদ শাহরিয়ার :
শিশু ভূমিষ্ঠের পর সে থাকে পরনির্ভরশীল। খাওয়া-ঘুম এমনকি দৈনন্দিন কাজে অন্যের সাহায্য ছাড়া তার এক মুহুর্তও চলে না। জীবন চক্রের এই অতি সত্য যেন চিরন্তন। সেটা যেমন মানব শিশুর বেলায় সত্যি তেমনি যেকোনও নতুন শুরুর বেলায়ও সত্যি। বাণিজ্য প্রতিদিন এর শিশুকাল চলছে। ২০২০ সালের করোনার দুর্বিষহ সময়কে একপাশে রেখেই সাহসী যাত্রা করে দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিন। ভূমিষ্ঠ হওয়া যেমন সাহসী ছিল পথচলা ততটা সহজ ছিল না সদ্যজাত এই শিশুর। নানান কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ক্রমেই হামাগুড়ি দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দিতে থাকে। ইতেমধ্যেই দাঁড়াতে শিখে গেছে। কিছুটা হাঁটার চেষ্ঠা চলছে। গতকাল দুই বছর পূর্ণ করে আজ পা রাখল তিন বছরে।
এই পথ চলায় অনেকেই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সে হাত ধরে বাণিজ্য প্রতিদিন ক্রমশ: নিজের অভীষ্ঠ লক্ষ্যপানে ছুটে চলেছে। ইতোমধ্যে পত্রিকাটি সরকারি মিডিয়াতালিকাভূক্ত হয়েছে। নিজেদের একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ রয়েছে। পত্রিকার অনলাইন ভার্সন মুহুর্তেই লাখো পাঠকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে ‘যখনকার খবর তখন’। যারা পত্রিকা পাচ্ছেন না বা কিনতে পারেন না তাঁরাও চাইলে ই-পেপারে দেখে নিতে পারেন তরতাজা খবরের আপডেট।
মাত্রই ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুর জন্য বিজ্ঞাপন ‘উপহার’ এর ডালি নিয়ে হাজির হয়েছেন কেউ কেউ। প্রয়োজনের তুলনায় তা অতি নগণ্য হলেও আমরা হৃদয় দিয়ে ভালোবাসার এই উত্তাপ গ্রহণ করেছি। সে ভালোবাসা আমাদের শক্তি যুগিয়েছে, মনোবল বাড়িয়েছে, সাহস যুগিয়েছে। সে ভালোবাসায় আমরা নিজেদের শাণিত করেছি। প্রাণিত হয়েছে আমাদের হৃদয়।
মাত্রই পথ চলতে শুরু করা এই পত্রিকাটির কণ্ঠরোধের চেষ্টা হয়েছে। যন্ত্রণার ফাঁদ আমাদের স্মম্ভিত করেছে, তবে আমরা স্তব্ধ হইনি। মহান সৃষ্টিকর্তা, মহাপ্রভু আল্লাহ আমাদের পথবিচ্যুত করেননি। কোনও লোভ আমাদের প্রবঞ্চনায় ফেলতে পারেন নি।
এসব সম্ভব হয়েছে, নবীন এবং প্রবীণের সমন্বয়ে গড়া প্রতিভাবান একটি টিমের কারণে। এখানে আমার অবদান খুবই সামান্য-তুচ্ছ। দুই বছরের পথ চলায় যত সাফল্য সবকিছুর ভাগিদার পুরো টিম। যা কিছু করতে পারিনি তার দায়ভার আমার। আমার সৌভাগ্য এরকম একটি টিমতে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ আল্লাহ আমাকে করে দিয়েছেন।
কালের পরীক্ষায় আমরা উত্তীর্ণ হতে চাই। আমাদের ‘ফুট প্রিন্ট’ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আশার আলো হবে, অন্ধকার পথের দিশা হবে এটাই আমাদের নিত্যদিনের আরাধনা।
গত দুই বছরে যারা আমাদের ভালোবেসে পাশে ছিলেন, সেসকল পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতাসহ সকল শুভানুধ্যায়ীদের নিকট আমাদের আজীবন ঋণ। এই ঋণ কখনো শোধ হবার নয়। কৃতজ্ঞতা সকল প্রতিষ্ঠানের পিআরডি ডিভিশনের সংশ্লিষ্টদের প্রতি। এই মানুষগুলো কোনও রকম বিরক্তি ছাড়াই দিনরাত কাজ করেন। তাঁদের দেখে আমি উৎসাহ পাই। তাঁদের ডেডিকেশন থেকে আমি অনুপ্রেরণা খুঁজি।
বাণিজ্য প্রতিদিন আজ তৃতীয় বছরে পা রাখল। প্রতিষ্ঠানাটি এখনও শিশু। শিশুর হাড় শক্ত হতে যেমন লাগে ক্যালসিয়াম। তেমনি বাণিজ্য প্রতিদিনের হাড় শক্ত হওয়ার জন্য ক্যালসিয়াম দরকার। আমাদের কাছে এই ক্যালসিয়ামের নাম তথ্য। যেসকল তথ্য জনসম্মখে আনা দরকার নির্ভাবনায় সেসকল তথ্য আমাদের দিতে পারেন। আমরা সাহসের সাথে সেকল তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে নির্ভুল সংবাদ আকারে জনগণের সামনে নিয়ে আসতে চাই। রক্ত ছাড়া যেমন যেমন মানুষের জীবন বাঁচে না। তেমনি রক্ত ছাড়া একটি পত্রিকার বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। আমাদের কাছে এই রক্তের নাম বিজ্ঞাপন।
আগামীদিনের পথ চলায় আপনারা বাণিজ্য প্রদিতদিনকে আপনাদের ভালোবাসায় রাখবেন। এই বিশ্বাসের মূল আমাদরে হৃদয়ের অনেক গভীরে প্রোথিত।
লেখক: সম্পাদক, বানিজ্য প্রতিদিন